জাগো গো বাঘিনী
দেশে এলে আমার একটা স্বপ্ন আছে। আমার দায়িত্বাধীন এলাকার মেয়েরা সপ্তাহে অন্তত: এক দুবার সরকারী নম্বরে ফোন করে বলবে, “ভাইয়া, এক বদমায়েশ ইভটিজিং করতে এসেছিল, পিটিয়ে আলুভর্তা বানিয়েছি। শিগগির পুলিশ পাঠান”। আমিও হাসতে হাসতে দুজন কন্সটেবল পাঠিয়ে দেব অন দা স্পট। আমার বদলীর সময় আসতে আসতে এই ফোন কলের সংখ্যা শূন্যতে নেমে আসবে।
এই স্বপ্ন মোটেও দিবাস্বপ্ন না। আমাদের মেয়েরা এভারেস্টে ওঠে, ফাইটার এয়ারক্রাফট চালায়, প্যারাট্রুপার হয়। আমার মা পঞ্চাশোর্ধ্ব একজন নারী, but if you mess with her, God save you.
তিনি তাঁর পুলিশ পুত্রকে কিচ্ছু জানাবেন না, নিজেই পিটিয়ে আপনাকে লাশ বানিয়ে ফেলবেন। আমার বয়েস একত্রিশ এবং আমি একজন প্রফেশনাল ক্রাইম ফাইটার, still I am afraid of her.
নওরীন ভাবী একটা মজার কথা বলেছেন, “বাঙালি পুরুষ শব্দটা হচ্ছে Oxymoron, করলার রসগোল্লার মত”। নিজে বাঙালি পুরুষ হয়েও বলতে পারি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এইটা শতভাগ সত্য। Consent বলে কোন শব্দ আমাদের অভিধানে নেই। একটা মেয়েকে একা পেলে তার গায়ে হাত দেয়াটাকে আমরা অধিকার বলে মনে করি। অফিসের যে কলিগ রাস্তার নেড়ি কুকুরের ডাকেও পালিয়ে পথ পায়না, বিদেশের কনফারেন্সে গিয়ে সেই লোকটাই পাশের নারী কলিগের হোটেল রূমে মাতাল হয়ে হানা দেয়। বাসার ড্রাইভার, গৃহশিক্ষক, রিক্সাচালক, অফিসের বস থেকে শুরু করে এমনকী ইউনিফর্ম সার্ভিস- সব জায়গায় এ ধরণের লোক আছে এবং খুব ভাল পরিমাণেই আছে।
এই সমস্যা সমাধানের দুইটা উপায় আছে। প্রথমটা দীর্ঘমেয়াদী: সমাজ পাল্টাতে হবে। এর জন্যে ক্লাস ওয়ান থেকে টেক্সটবইতে শেখাতে হবে কোন আচরণ গ্রহণযোগ্য আর কোনটা না। আইনের শাসন, অপরাধীর শাস্তি ইত্যাদি নিশ্চিত করতে হবে।
দ্বিতীয় উপায়টা ইন্সট্যান্ট ধামাকা।
আপনি যদি পুরুষ হন, মেয়েদের সেক্সুয়ালি হ্যারাস করা থেকে দূরে থাকুন। কাউকে যদি ভাল লাগে, সাহস করে শালীন উপায়ে নিজের ভাললাগা তাকে জানান। তিনি সম্মতি দিলে (এবং এতে যদি কারো ক্ষতি না হয়) বিনা দ্বিধায় তার সাথে ঘণিষ্ট হোন, আর সম্মতি না দিলে সম্মানের সাথে সরে আসুন। দিস ইজ হোয়াট আ রিয়েল ম্যান ডাজ।
আপনি নারী হলে কেউ যদি আপনাকে সেক্সুয়ালি হ্যারাস করে, যাস্ট ফাইট ব্যাক। পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমার তিন পর্বের আর্টিকেলগুলো পড়ুন, এবং এই আর্টিকেলে দেয়া ছবি অনুযায়ী আঘাত করুন। মনে রাখবেন, ফাইট ব্যাক করতে ব্লাক বেল্ট হওয়া লাগেনা, আপনার সাহসই যথেষ্ট।
কেউ বাজেভাবে স্পর্শ করেছে? ব্যাগ থেকে চাবি বের করুন, ছবিতে দেখানো স্টাইলে মুঠ করে ধরুন, তারপর ওটা দিয়ে চোয়াল/গলা বরাবর মারুন ঘুষি।
হাতে কিছু নেই? ছবিতে দেখানো গলার নরম অংশে আঙুল দিয়ে সজোরে আঘাত করুন।
রেইপ করতে এসেছে? দুই আঙুল আক্রমণকারীর চোখে ঢুকিয়ে দিন।
মায়া করবেন না। পেনাল কোডের একশ ধারা অনুযায়ী আইন আপনার পক্ষে, এবং নিজেকে রক্ষা করতে এমনকী মৃত্যু ঘটানোর অধিকারও আইন আপনাকে দিয়েছে যদি প্রয়োজন হয়।
আমার একটা বোন আছে। আমি কখনোই চাইবোনা সে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়ে আমার কাছে কান্নাকাটি করুক, বরং আমার ইচ্ছা সে ওই বদমায়েশের এমন অবস্থা করবে যাতে তাকে স্ট্রেচারে করে হাসপাতাল নেয়া লাগে।
Violence is never my cup of tea. I never preach violence. However, if it is needed for self defence, I recommend going all out.
সারাজীবন পড়ে পড়ে মার খাওয়া আমাদের মেয়েরা পাল্টা মার দিতে শিখুক, ছিন্ন করুক সমাজের পরিয়ে দেয়া দাসত্বের শেকল।
One pervert at a time.
প্রথম প্রকাশিতঃ ২রা এপ্রিল, ২০১৬