হার্ভার্ডের দিনলিপি ০০১

শুরুর কথা

লিখব না লিখব না ভেবেও শুরু করলাম এই সিরিজটি।

না লেখার পেছনে যুক্তি একটাইঃ যতই চেষ্টা করি না কেন ইট উইল লুক লাইক শো অফ। তাছাড়াও,নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দশ জনের কাছে বলাটা এই বয়েসে এসে অনেকটা ধৃষ্টতার পর্যায়ে পড়ে বলে আমার মনে হচ্ছে।কয়েক বছর আগে এই ম্যাচিউরিটি আমার ছিলো না, এখনও যে হয়েছে তা দাবী করিনা তবে চেষ্টা করছি। আমার মত ক্ষুদ্র জীব কোথায় কবে কি করলাম এতে এই বিশ্বব্রম্মাণ্ডের কারো কিছু যায় আসে না, নিকটজনেরা ছাড়া। হ্যাঁ, অনুপ্রেরণা যোগানো একটা কারণ হতে পারে কিন্তু শক্ত করে চেপে ধরলে এই যুক্তিটাও ধোপে টেকে না। মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগাতে হলে একটা পর্যায়ে যেতে হয় বলে আমি মনে করি, সমাজে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অবদান রাখতে হয়।ইন আদার ওয়ার্ডস, ইউ হ্যাভ টু বি সামবডি টু ইন্সপায়ার আদারস।

বহু খুঁজেও এ ধরণের কোনও অবদান নিজের পক্ষে খুঁজে পেলাম না,ভবিষ্যতেও হবার সম্ভাবনা শূন্যের কাছাকাছি।কাজেই, এই দিনলিপি পড়ে মানুষ উপকৃত হবে বা অনুপ্রাণিত হবে এইটা মনে করাটাও আরেকটা বড় মাপের উদ্ধত আচরণ।এরকম বেয়াদবীমূলক আচরণ না করাটাই আমার মত সামান্য মানুষের জন্য মঙ্গলজনক।

এবার বলি লেখার পেছনে যুক্তির কথা। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এতদিন শুধু নামই শুনে এসেছি, বাইরে থেকে এখানে কি হয় এটা বুঝতে পারিনি, বোঝা সম্ভবও না। প্রথম সপ্তাহে আমার অনুভূতি হয়েছে জীবনে প্রথম সমুদ্র দর্শনের মত। জ্ঞান চর্চা, মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং সমাজকে পাল্টে দেবার যে সুবিশাল মহা আয়োজন এখানে হয়ে চলছে- একা একা এই হিমালয়সম বিশাল অভিজ্ঞতা নেয়াটা আমার কাছে পাপ বলে মনে হয়েছে।স্রষ্টার পরম দয়াতে এমন একটা অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ এসেছে, স্বার্থপরের মত এই অভিজ্ঞতা আমি একাই নেব? নিজের সাধ্য অনুযায়ী এর কিছুটা আমার মাধ্যমে প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশের কিছু ছেলেমেয়ে নেবেনা- এটা আমার কাছে একটা অপরাধ বলে মনে হয়েছে।

এই কারণেই মূলতঃ লেখার সিদ্ধান্ত নেয়া। হার্ভার্ডে পড়তে আসা প্রথম বাংলাদেশী আমি নই, শেষ জনও আমি না।তবে আমার মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপীঠের অভিজ্ঞতা কিছু মানুষ নেবেন, এটাই চেষ্টা করব।

স্বাগতম!

#হার্ভার্ড

(৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮)

Comments

comments