“ভাইয়া, দশ বারোজন ছেলে আমাকে ধরলে আমি সেল্ফ ডিফেন্স শিখে কি করব?”
ঠিক এই মাইন্ডসেটের কারণেই কিন্তু সেক্সুয়াল অফেন্ডাররা উৎসাহ পায়| আপনাদের প্রশ্ন খুবই যৌক্তিক, কিন্তু আপনারা একটা বেসিক জিনিস মিস করছেন- তা হল অপরাধ মন:স্তত্ব বা Criminal Psychology।
তেলাপোকা শ্রেণীর কাপুরুষ ছাড়া একটা মেয়েকে শারীরীকভাবে আক্রমণ করার চিন্তা কারো মাথায় আসবে না, আর সেটা যখন কেউ দল বেঁধে করে- ধরে নিতে হবে এই জানোয়ারগুলো তেলাপোকারও অধম|
অসংখ্য রিসার্চে দেখা গিয়েছে, যেসব মেয়ে কোনরকম সেল্ফ ডিফেন্স না জেনেও শুধুমাত্র চিৎকার করেছে আক্রমণকারীর দিকে এতেই একটা বিরাট সংখ্যক রেইপ হতে গিয়েও হয়নি|
জেনারেল আইজেনহাওয়ার একটা কথা বলেছিলেন:
Its not the size of the dog
Its the size of the fight in the dog that matters
মাস চারেক আগে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের
এর পর যা ঘটল তার জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না| নৃত্যের তালে কাছাকাছি এসেই ওই মেয়েটি তার হাঁটু দিয়ে প্রচন্ড জোরে আঘাত করল বদমায়েশটার অণ্ডকোষ বরাবর| ছেলেটি কোঁক করে একটা শব্দ করে প্রথমে মাটিতে বসে পড়ল, তারপর আস্তে করে বেরিয়ে গেল পার্টি থেকে|
কেউ খেয়াল করেনি ঘটনাটি, তবে আমার চোখ এড়ায়নি| মেয়েটি পরের রাউন্ডে আবার আমার সাথে নাচতে এলে জিজ্ঞাসা করলাম, “Whoa!! What was that, Anna!!”
মিষ্টি হেসে আনার রিপ্লাই: “You need not worry, man! We Dutch girls do it only to the ones who earn it, and we do not believe in delayed justice”
যে ছেলেটির সাথে প্রায় সমান উচ্চতার আমি মারামারি করার আগে দশ বার চিন্তা করতাম, সেই ছেলেটিকে শাস্তি দিতে আনার বুক কাঁপেনি একবারও|
এই জিনিসটার নাম “ফাইটিং স্পিরিট”, যা আসে বিজয়ের উদগ্র বাসনা থেকে| সেল্ফ ডিফেন্স প্রশিক্ষণ আপনাকে দেবে এই অমূল্য জিনিসটি, যা আপনি জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন|
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা এই ফাইটিং স্পিরিটের জোরেই কিন্তু নিজেদের চাইতে সব দিক দিয়ে সুপিরিয়র পাকি হানাদারদের শিকার করেছিল, আর আপনি সেই বীরদের কন্যা জায়া জননী হয়ে দেশি শূওরদের “ভাইঙ্গে দিতে” পারবেন না?
শেষ করার আগে একটা টেকনিকাল পরামর্শ দেই, দয়া করে সেল্ফ ডিফেন্সের নামে কোন স্পোর্টস শিখে সময় নষ্ট করবেন না| মার্শাল আর্টস আর সেল্ফ ডিফেন্স দুটো আলাদা জিনিস| গুগলে krav maga লিখে সার্চ করতে পারেন, কিছুটা আইডিয়া পাবেন| বয়েস কোন বাধা নয়, কিশোরী থেকে মধ্যবয়স্কা যে কেউ পার্লারে চার ঘন্টা না কাটিয়ে সপ্তাহে দুঘন্টা সেল্ফ ডিফেন্স শিখুন, নিরাপদ থাকবেন|
রূপচর্চা আপনাকে বাঁচাতে পারবেনা নারী, এবার শরীরচর্চা করুন! বিদ্রোহী কবির কবিতা দিয়ে শেষ করি:
চোখে চোখে আজ চাহিতে পারনা, হাতে রুলি পায়ে মল
ঘোমটা তোমার ছিঁড়ে ফেল নারী, ভেঙে ফেল ও শিকল!
যে ঘোমটা তোমায় করিয়াছে ভীরু ওড়াও সে আবরণ,
দূর করে দাও দাসীর চিহ্ন, যেথা যত আভরণ!
জাগো গো ভগিনী
প্রথম প্রকাশিতঃ ২৫ই মে, ২০১৫