সম্প্রতি বিবর্তন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম, “পিয়ার রিভিউড” “স্কলারলি” “একাডেমিক” জার্নাল কি জিনিস এটা আমরা বেশিরভাগ মানুষই জানিনা|
না জানাটা দোষের কিছু না, তবে এই গুগলের যুগে জেনে নেয়াটাই মনে হয় শ্রেয়|
বিবর্তনবাদের বিপক্ষে যখন উপরে উল্লিখিত কোন আর্টিকেল চাই, বেশিরভাগ সময়ে যুক্তি হিসেবে পাই ডাক্তার জাকির নায়েক বা হারুন ইয়াহিয়ার “যুক্তিময়” কোন আর্টিকেল | এই হতাশা থেকে মুক্তি পেতে আজকের লেখা|
কোন বিষয়ে আলোচনার সময় আমরা মূলত: তিন ধরণের ইনফরমেশন সোর্স ব্যবহার করি:
এক) সংবাদপত্রের আর্টিকেল, যেটির লেখক ওই বিষয়ে এক্সপার্ট হতেও পারেন আবার নাও পারেন| অর্থনীতি নিয়ে অমর্ত সেনও লিখতে পারেন আবার উৎপল শুভ্রও লিখতে পারেন- কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই| এসব আর্টিকেলে ভুলভাল তথ্য থাকার সম্ভাবনা থাকে প্রচুর| যত সংবাদপত্র আছে, Times থেকে শুরু করে নয়া দিগন্ত বা প্রথম আলো, যত ম্যাগাজিন আছে Playboy থেকে উম্মাদ পত্রিকা, এসবে প্রকাশিত সব আর্টিকেল এর অন্তর্ভুক্ত|
দুই) পড়াশোনার লাইনে আছেন এমন এক্সপার্ট (Academic) বা এ লাইনে কাজ করা পেশাদার(Professional) কারও লেখা আর্টিকেল| এই আর্টিকেলগুলো সাধারণত প্রকাশিত হয় বিভিন্ন জার্নাল বা ম্যাগাজিনে যা অন্য এক্সপার্ট দ্বারা রিভিউ বা পুনর্বিচার করা হয়নি| যেমন: কোন পত্রিকার বিজ্ঞান সাময়িকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্সের কোন প্রফেসরের লেখা আর্টিকেল|
তিন) পিয়ার রিভিউড ( স্কলারলি বা রেফারিড ) জার্নাল: যে কোন বিষয়ে একজন এক্সপার্টের লেখা এমন একটি আর্টিকেল যা প্রকাশিত হবার আগে এই বিষয়ের একাধিক এক্সপার্ট ( রেফারি হিসেবে যারা কাজ করেন) দ্বারা বার বার পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে| ওই বিষয়ে এটাই সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা আর্টিকেল| আপনি যখন কোন বৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক করবেন, তখন আপনার পক্ষে সবচেয়ে শক্তিশালী যুক্তি হবে এজাতীয় আর্টিকেলের রেফারেন্স|
অর্থনীতি নিয়ে পিয়ার রিভিউড স্কলারলি আর্টিকেল পড়তে চান? গুগলে লিখুন: Google Scholar, তারপর ওখানে ঢুকে সার্চ বারে লিখুন Economics.
ক্লিক করামাত্র আধ সেকেন্ডের মধ্যে লাখখানেক বিশেষজ্ঞ আর্টিকেল পেয়ে যাবেন|
উইকিপিডিয়া যে কোন বিষয় জানার জন্যে দারুণ একটা স্টার্টিং পয়েন্ট, কিন্তু একাডেমিক লাইনে এর কোন মূল্য নেই| তবে উইকিপিডিয়া আর্টিকেলের শেষে লিঙ্কগুলোতে অনেক সময় বিভিন্ন একাডেমিক জার্নালের লিঙ্ক দেয়া থাকে, যা আপনার খোঁজাখুঁজিতে সহায়তা করবে|
কেন পিয়ার রিভিউড জার্নালে প্রকাশিত লেখার এত মূল্য, তা জানতে নীচের কার্টুনটি দেখুন (সচল থেকে নিয়েছি এটা)| একাডেমিক পেপার পাবলিশ করার রাস্তা কত কঠিন, কিছুটা ধারণা পাবেন!
আশা করি পরবর্তীতে চার্চের টাকায় চলা কোন “বৈজ্ঞানিক”(?!) আর্টিকেল থেকে যুক্তি দিয়ে নিজেকে ক্লাউন প্রমাণিত করার আগে এই ছোট্ট লেখাটি আপনাকে বাঁচাবে!
( এ্যাঞ্জেলো স্টেট ইউনিভার্সিটি এর লাইব্রেরির ওয়েবসাইট থেকে ভাবানুবাদ করেছি, এটা মৌলিক লেখা নয়| )